প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ পদ্ধতি

ইনফো ফর প্রাইমারি-তে আপনাকে আবারো স্বাগতম। আজ আমি আপনাদের জানাবো প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোন পদ্ধতিতে শিক্ষক- শিক্ষিকা নিয়োগ হয়ে থাকে সে বিষয়ে। তো কথা না বাড়িয়ে চলুন জেনে নেয়া যাক।
প্রায় প্রতি বছর সরকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক- শিক্ষিকা নিয়োগ দিয়ে থাকেন। আর এই নিয়োগ দেয়া হয় থাকে দুই ভাবে।
ক. সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে এবং
খ. পদোন্নতির মাধ্যমে।
তবে পদোন্নতির মাধ্যমে শুধু প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে। কিন্তু মামলার কারণে বেশ কয়েক বছর যাবৎ প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি বন্ধ রয়েছে। যাই হোক আজ আমরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক শিক্ষিকা নিয়োগ পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব।
সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য আবেদন করতে হলে নারী প্রার্থীদের এসএসসি পাস এবং পুরুষ প্রার্থীদের স্নাতক ডিগ্রিধারী হতে হতো। পরিমার্জিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালায় নিয়োগ পাওয়ার পর শিক্ষকদের তিন বছরের মধ্যে এক বছর মেয়াদী সার্টিফিকেট ইন এডুকেশন (সি.ইন.এড) অথবা দেড় বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা ইন এডুকেশন (ডিপিএড) প্রশিক্ষণ নিতে হবে। তবে বর্তমানে সার্টিফিকেট ইন এডুকেশন (সি.ইন.এড) বাতিল হয়ে যাওয়ার পথে। তিন বছরের মধ্যে এই প্রশিক্ষণ নিতে না পারলে শিক্ষকদের চাকরি স্থায়ী করা হয়। আগে এই প্রশিক্ষণ নেওয়ার সময় ছিল চার বছর। প্রশিক্ষণের সময় এক বছর কমিয়ে আনাতে শিক্ষকদের চাকরি আরও কম সময়ে স্থায়ী করা সম্ভব হয়।
এছাড়া সংশোধিত বিধিমালায় উপজেলা বা থানাভিত্তিক শূন্যপদ অনুযায়ী কোনো কোটায় উপযুক্ত প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধাক্রম অনুযায়ী একই উপজেলা বা ক্ষেত্রমতে থানায় উত্তীর্ণ সাধারণ প্রার্থীদের মধ্য থেকে সেসব পদ পূরণের শর্ত সংযোজন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে নারীদের ৬০ ভাগ কোটা রয়েছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে কর্মরত অধিকাংশ শিক্ষকই নারী। বর্তমানে সারাদেশে ৬৩ হাজার ৮৬৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে জানুয়ারি ২০১৩ থেকে তিন ধাপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী ২৬ হাজার ১৯৩টি নিবন্ধিত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের আওতায় আনা হয়েছে। যা বর্তমান সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
এছাড়াও এই সংশোধিত বিধিমালায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নারী শিক্ষক নিয়োগে শিক্ষাগত যোগ্যতা বাড়ানো হচ্ছে। এতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পেতে হলে নারী প্রার্থীদের কমপক্ষে এইচ.এস.সি পাস হতে হবে। এইচ.এস.সি বা সমমান অথবা স্নাতক বা সমমানের পরীক্ষায় পাস করা নারীরাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আর প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পেতে নারী-পুরুষ উভয়েরই স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি পরীক্ষায় কমপক্ষে দ্বিতীয় বিভাগ থাকতে হবে।
 

সরকারী গেজেট অনুসারে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে যে সব যোগ্যতা থাকতে হবে সে গুলো হলো:

প্রধান শিক্ষকের ক্ষেত্রে
বয়সসীমা-২৫-৩৫ বৎসর
নিয়োগ পদ্ধতি- ৬৫% পদ সহকারী শিক্ষকদের মধ্য হইতে পদোন্নতির মাধ্যমে এবং ৩৫% পদ সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে।
প্রয়োজনীয় যোগ্যতা- পদোন্নতির ক্ষেত্রেঃ সহকারী শিক্ষকের ক্ষেত্রে উক্ত পদে ৭ (সাত) বৎসরের চাকুরীর অভিজ্ঞতা; তবে শর্ত থাকে যে, উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ । সহকারী শিক্ষকদের ক্ষেত্রে সার্টিফিকেট ইন এদুকেশন (সি-ইন-এড)/ডিপ্লোমা ইন এডুকেশন (ডি.পি.এড) প্রশিক্ষণ থাকতে হইবে।
সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে: কোন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হইতে ন্যূনতম দ্বিতীয় বিভাগ/শ্রেনি/সমমানের জিপিএসহ স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রী।

সহকারী শিক্ষকের ক্ষেত্রে:

বয়সসীমা- ১৮-৩০ বৎসর
নিয়োগ পদ্ধতি- সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে।
প্রয়োজনীয় যোগ্যতা- পুরুষ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে: কোন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হইতে ন্যূনতম দ্বিতীয় বিভাগ/শ্রেনি/সমমানের জিপিএসহ স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রী।
মহিলা প্রার্থীদের ক্ষেত্রে: উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় ন্যূনতম দ্বিতীয় বিভাগ/শ্রেনি/সমমানের জিপিএসহ উত্তীর্ন অথবা স্নাতক বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ন।

সবাইকে আবারো শুভেচ্ছা জানিয়ে শেষ করছি। আর হ্যাঁ যাওয়ার আগে একটি কথা। পোষ্টটি পড়ে আপনি যদি মনে করেন নতুন কিছু জেনেছেন বা ভাল লাগে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।

No comments:

Post a Comment